কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অনেকগুলাে কম্পিউটারকে একসাথে জুড়ে দেওয়া হয়। যেন একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে যােগাযােগ করতে পারে। জুড়ে দেওয়া কম্পিউটারগুলাের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে 4 ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন:
- 1: PAN ( Personal Area Network )
- 2: LAN ( Local Area Network )
- 3: MAN ( Metropolitan Area Network )
- 4: WAN ( Wide Area Network )
ব্যক্তিগত পর্যায়ে যে নেটওয়ার্ক ( ব্লু - টুথ এর মাধ্যমে ) তৈরি করা হয় তা হলাে PAN. বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে সকল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে দেখা যায় , এগুলাে সবই লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক। সচরাচর একটি শহরের মধ্যে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তা হলাে MAN । দেশ জুড়ে বা পৃথিবী জুড়ে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তা হলাে WAN. এই নেটওয়ার্কের অন্তর্গত কম্পিউটারগুলাে জুড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিকে বলা হয় নেটওয়ার্ক টপােলজি।
Bus Topology
এই টপােলজিতে একটা মূল ব্যাকবােন বা মূল লাইনের সাথে সবগুলাে কম্পিউটারকে জুড়ে দেওয়া হয়। বাস টপােলজিতে কোনাে একটা কম্পিউটার যদি অন্য কোনাে কম্পিউটারের সাথে যােগাযােগ করতে চায় তাহলে সব কম্পিউটারের কাছেই সেই তথ্য পৌছে যায়। তবে যার সাথে যােগাযােগ করার কথা কেবল সেই কম্পিউটারটি তথ্যটা গ্রহণ করে। অন্য সব কম্পিউটার তথ্যগুলােকে উপেক্ষা করে। মনে রাখতে হবে মূল বাস / ব্যাকবােন নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়।
Ring Topology
রিং টপােলজি হয় গােলাকার বৃত্তের মতাে। ছবি দেখতে পারছেন এই টপােলজিতে প্রত্যেকটা কম্পিউটার অন্য দুটো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত। এই টপােলজিতে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য যায় একটা নির্দিষ্ট দিকে। রিং টপােলজিতে কম্পিউটারগুলােকে কিন্তু বৃত্তাকারে থাকার দরকার নেই সেগুলাে এলােমেলােভাবে থাকতে ও পারে। কিন্তু যদি সব সময়েই কম্পিউটারগুলাের মাঝে বৃত্তাকার যোগাযােগ থাকে তাহলেই সেটি রিং টপােলজি। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে কোন একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক বিকল হয়ে যায়।
Star Topology
কোনাে নেটওয়ার্কের সবগুলো কম্পিউটার যদি একটি কেন্দ্রীয় হাব ( Hub ) / সুইচ ( Switch ) - এর সাথে যুক্ত থাকে তাহলে সেটিকে বলে স্টার টপােলজি । এটি তুলনামূলকভাবে একটি সহজ টপােলজি এবং অনুমান করা যায় কেউ যদি খুব তাড়াতাড়ি সহজে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায় তাহলে সে স্টার টপােলজি ব্যবহার কর পারে। এই টপােলজিতে একটি কম্পিউটার নষ্ট হলেও বাকি নেটওয়ার্ক সচল থাকে। কিন্তু কোনােভাবে কেন্দ্রীয় হাব / সুইচ নষ্ট হলে পুরাে নেটওয়ার্কটিই অচল হয়ে পড়ে । স্টার টপােলজিতে কম্পিউটারগুলােকে স্টারের মতােই করে সাজাতে হবে তা কিন্তু সত্যি নয়।
Tree Topology
ট্রি মানে হচ্ছে গাছ। কাজেই এই টপােলজিটাকে গাছের মতাে দেখানাের কথা । ছবিটা একটু ভালাে করে দেখলেই বুঝতে পারবেন আসলে এটা গাছের মতাে। গাছে যে রকম কাণ্ড থেকে ডাল একটা ডাল থেকে অন্য ডাল এবং সেখান থেকে আরাে ডাল বের হয় এখানেও তাই হচ্ছে। এই টপােলজিতে একটি মজার বিষয় হলাে এখানে অনেকগুলাে স্টার টপােলজিকে একত্র করা হয়।
Mesh Topology
এই টপোলজিতে কম্পিউটারগুলাে একটি আরেকটির সাথে যুক্ত থাকে এবং একাধিক পথে যুক্ত হতে পারে । এখানে কম্পিউটারগুলাে শুধু যে অন্য কম্পিউটার থেকে তথ্য নেয় তা নয় বরং সেটি নেটওয়ার্কের অন্য কম্পিউটারের মাঝে বিতরণও করতে পারে । যদি এমন হয় যে একটি নেটওয়ার্কের প্রতিটি কম্পিউটারই সরাসরি নেটওয়ার্কভুক্ত অন্য সবগুলাে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে সেটিকে বলে কমপ্লিট মেশ । ছবিতে ছয়টি কম্পিউটারের একটি কমপ্লিট মেশ দেখানাে হয়েছে।