মিশরীয় পিরামিড এবং এলিয়েনের রহস্য জনক মমি।


মিশর এমন একটি রাষ্ট্র যার চারপাশে লুকিয়ে রয়েছে প্রাচীন সভ্যতার নানান ঐতিহ্য। মিশরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে নানান অজানা রহস্য ও ঘটনা যা সবাই জানতে চায়। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে মিশরের বিভিন্ন পিরামিডের অভ্যন্তরে আজও লুকিয়ে রয়েছে এমন বহু অজানা রহস্য যার সমাধান হলে মানব জাতির সামনে উন্মোচিত হবে মিশরের নানান আজানা রহস্যময় তথ্য। মিশরের সুপ্রাচীন পিরামিডগুলোর অভ্যন্তরে কালো আঁধারে আচ্ছাদিত গুপ্ত কক্ষের মধ্যে আজও লুকিয়ে আছে বিভিন্ন ইতিহাস ও অজানা রহস্য।


1988 সালের একটি ঘটনা মিসরের গিজা পিরামিডের ভেতরে অনুসন্ধানের সময় ফরাসী প্রত্নতাত্বিক চ্যাপেরাট গোপন কক্ষের সন্ধান। খুব গভীরে থাকা ওই কক্ষটি সম্পর্কে তিনি যে ধারণা পেলেন তা হলো পিরামিডটি নির্মাণের পরপরই সেটিকে চিরতরে বন্ধ করে দেয়া হয়। যেন পরবর্তীতে আর কেউ সেখানে প্রবেশ করতে না পারে। ওই প্রত্নতাত্বিক কক্ষটির বাইরে দেয়ালে দেখেন মিসরীয়দের আঁকা কিছু সংকেত। যা হায়ারোগ্লিফিক্স নামে পরিচিত। এই সম্পর্কে চ্যাপেরাট নামের ওই প্রত্নতাত্বিকের ভালোই ধারণা ছিল। তবে অর্থ উদ্ধার করে তিনি যা বুঝলেন, তাতে তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার জোগাড়।সংকেতের অর্থ দাড়ায় এমন প্রবেশ নিষেধ। এখানে যিনি শুয়ে আছেন তিনি আকাশের তারা থেকে নেমেছিলেন ফারাও দের কাছে। বিশেষ দূত হিসেবে লেখাটি প্রত্নতাত্বিককে আরও উৎসাহী করে তোলে। কক্ষটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ জেনেও এর পথ খুঁজতে শুরু করেন।কক্ষটি আবিস্কারের পর সেখানে এমন কিছু জিনিস পাওয়া যায় যার ব্যাখ্যা মেলানো সত্যিই কঠিন। কক্ষের ভেতরে ছিল স্বচ্ছ স্ফটিকে ঢাকা একটি শবাধার। তবে ভেতরটি লক্ষ্য করে হতবাক হয়ে যান ওই প্রত্নতাত্বিক। ভেতরে রয়েছে কোনো মানুষ নয় এলিয়েন।


দেখে মনে হয়, তার মৃত্যু হয়েছিল স্বাভাবিকভাবেই। এছাড়া ঘরটিতে পাওয়া যায় প্যাপিরাসের পাতায় কিছু লেখা।লেখাগুলো পড়ে আরও চমকে যান তিনি। সেখানে এক জায়গায় লেখা রয়েছে এখানেই শুয়ে আছেন আকাশ থেকে আসা সেই বিশেষ দূত। শুধু তাই নয়, লেখা ছিল তার ভাইয়ের আসন্ন আগমনের বার্তা নিয়েই এসেছিলেন তিনি।এমন অদ্ভূত ও রহস্যময় লেখা আর মানুষের মতো আকৃতির শবাধার দেখে ভয় পেয়ে যান ওই প্রত্নতাত্বিক। পিরামিড থেকে বের হয়ে এসে সাথে সাথে যোগাযোগ করেন তার বন্ধু স্পেনের জীববিজ্ঞানী এফ ডি ব্রাগা সাথে।বিষয়গুলো জেনে ব্রাগাও মিসরের পথ ধরেন। পিরামিডে পৌঁছে ওই মমিটি থেকে রক্ত এবং "DNA" এর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার বন্ধু আগেই বলেছিলমমিটি সাধারণ কারও নয় এলিয়েনের!অবশ্য ব্রাগার সেই ইচ্ছে কখনোই পূরণ হয়নি। মিসরে নামতেই বুঝতে পারলেন কিছু একটা সেখানে ঘটেছে। বিমান থেকে নামতেই মিসরীয় কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করে। শুধু তাই নয় ফিরতি ফ্লাইটেই তাকে আবার পাঠিয়ে দেয়া হয় মাদ্রিদের পথে। একদিক কৌতূহল অন্যদিকে আতঙ ব্রাগা বুঝলেন সত্যিই কিছু একটা ঘটেছে মিসরের গিজা পিরামিডকে ঘিরে। যে বন্ধু তাকে সংবাদ দিয়েছিলেন তার সঙ্গেও আর যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তিনি। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এসএসআই পিরামিডটিতে তখন সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।


সেই রহস্যময় বস্তুটাও বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং সড়িয়ে ফেলা হয় গোপন স্থানে। ওই ফরাসি প্রত্নতাত্বিকের ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা জানা যায়নি। 1813 সালের দিকে খলিফা আব্দুল্লাহ আল মামুন এর আমলে মানব আকৃতির এমন ভিনগ্রহী প্রাণীর কথার উল্লেখ রয়েছে। ষাটের দশকের খ্যাতিমান সাংবাদিক "Peter Tompks" দাবি করেছিলেন খলিফা আল মামুনের ওই কাহিনী মিথ্যে নয় বরং সত্যি ছিল খলিফা মামুন শুধু এলিয়েনের মমিই খুঁজে পাননি সাথে পেয়েছিলেন স্বর্ণ নির্মিত শবাধার, অমূল্য তরবারিসহ একটি আশ্চর্য রুবি।


মিসরে ফারাও শাসনামলে ভীনগ্রহের প্রাণীরা আসা যাওয়া করতো এমন দাবি নতুন নয়। সেই সভ্যতার উৎকর্ষতার পেছনেও বুদ্ধিমান এলিয়েনের অবদান রয়েছে বলে কেউ কেউ দাবি করেন। পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে এখন অনেক বিজ্ঞানীই আগ্রহী। এ সম্পকে জানতে বিভিন্ন দেশর সরকারও নিয়েছে মহাকাশ গবেষণায় নানা পদক্ষেপ। এলিয়েন কিংবা "UFO" মানুষের শুধুই মিথ্যে ধারণা কিনা সময়ই তা প্রমাণ করে দিবে।


1947 সালে "New Mexico Roswell"এ অজানা যান অর্থাৎ "UFO" বিধ্বস্তের ঘটনার পর মানুষ বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে। মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে যাওয়া দেশগুলো ধীরে ধীরে এলিয়েনের অস্তিত্বের বিষয়ে মুখ খুলছে। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি পেরুতে খুঁজে পাওয়া ৫ টি প্রাচীন মমির ছবি প্রকাশ করেছে। রীতিমতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজ্ঞানীরা যে মমিগুলোর ছবি জনসমক্ষে উন্মোচন করেছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম দি সান এবং দি ডেইলি স্টার এক প্রতিবেদনে জানায় প্রাচীন দেহগুলোকে নিখুঁতভাবে মমি করে রাখা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা জানান পরীক্ষা করে দেখা গেছে মমিগুলো কম করে হলেও 17শ বছরের পুরনো। কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে সেগুলো মানুষের নয় নাজকা’র মমি "The mummies of Nazca" শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনে পেরু’র খ্যাতিমান সাংবাদিক জিমি মাউসেনও উপস্থিত ছিলেন। যিনি "UFO" বিশেষজ্ঞ হিসেবেও পরিচিত। ছবিগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি দাবি করেন প্রাচীনকালের এসব মরদেহের সঙ্গে মানুষের শরীরের মিল খুব কমই রয়েছে। দেহের কাঠামো বিশ্লেষণ করলে সেগুলো কল্প কাহিনী হিসেবে প্রচলিত রেপটালিয়ান এলিয়েনদের ধারণাই জোরালো করে।

Copy Code And Press "P"


পেরুর এক শবাধার থেকে ওই 5 টি মমির সন্ধান পাওয়া যায়। আবিস্কারের পর বিষয়টি প্রকাশে বিজ্ঞানীদল কিছুটা দ্বিধাতেও ছিলেন কেননা, যে প্রমাণগুলো তাদের সামনে এসেছে তা অনেকের বিশ্বাসে চিড় ধরাতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে মাউসেন অবশ্য জোর দাবি করেন "X-ray" প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মমিগুলোর যে ছবি তারা তুলেছেন তাতে মিথ্যের কোনো স্থান নেই। আজ থেকে 17শ বছর আগের মমিগুলো মানুষের ছিল না। মানুষের হবেই বা কি করে রুশ বিজ্ঞানীরাও দেখিয়ে দিলেন যে দু’পেয়ে হলেও মমিগুলোর সঙ্গে মানুষের মিল খুব কমই রয়েছে। তাদের মাথা ও চেহারার আকার হাতের 3 আঙ্গুল কখনই মানুষের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। প্রকৃতির খেয়ালে মানুষের শরীরে কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা গেলেও একই সঙ্গে 5 টি মমির মধ্যে তা থাকার কোনো যুক্তিই নেই। আনুমানিক 245 থেকে 410 খ্রিস্টাব্দের ওই মমিগুলো যে স্থানটি থেকে পাওয়া গেছে তা নানা কারণেই বিতর্কিত। পেরুর প্রাচীন শহর নাজকা’য় যে এলিয়েনের যাতায়াত ছিল তার অসংখ্য প্রমাণ দেখিয়েছেন "UFO" বিশ্বাসীরা।


রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানান, এই আবিস্কার মেনে নিলে পৃথিবীর ইতিহাস অন্যভাবে রচনা করতে হবে। একই সঙ্গে পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে দীর্ঘদিনের যে বিতর্ক রয়েছে তারও অবসান হবে বলে তারা দাবি করেন। পৃথিবীর জলবায়ুর জন্য হোক, কিংবা ভারসাম্য তারা আশা প্রকাশ করেন বিভিন্নপ্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পিরামিড ও স্টোনহেঞ্জ গুলোর অবস্থান ও কার্যকারিতার ব্যাখ্যাও হয়তো এমনিভাবেই একসময় প্রকাশ পাবে।


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আসসালাম অলাইকুম

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم