ডেঙ্গু জ্বরের কারণ লক্ষণ এবং ডেঙ্গু জ্বর কি ?


এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ, এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করার 4 থেকে 5 দিনের মধ্যে জ্বর হয়। জ্বরের তাপমাত্রা 105 ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে। এই ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই মশাগুলোকে ডেঙ্গু মশা বলা হয় থাকে।


ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কারণ

ডেঙ্গু জ্বর হয় ভাইরাস থেকে, ডেঙ্গু মশা নামের ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশার কামড়ে ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে 4 থেকে 5 দিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর হয়। যদি সাধারণ মশা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড় দেয় তবে সে মশাটিও ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হবে।এই মশা আবার সুস্থ মানুষের গায়ে কামড় দিলে সে মানুষটি ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হবে। এভাবে চারদিকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে যাবে। এভাবেই ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত জ্বরে মানুষ আক্রান্ত হয়।


ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ বা আলামত গুলো কি কি ?

সাধারণত তেমন লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না। তবে যাদের দেখা যায় তাদের এরকম কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে তা হচ্ছে, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, গায়ে লাচে গোটা গোটা দাগ দেখতে অনেকটা ঘামাচির মত, চোখের দিকে ব্যথা, সারা শরীরের হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা। অনেক ক্লান্তিবোধ করা। জ্বর 105 ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত থাকা। তবে সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর 4 থেকে 7 দিন পর্যন্ত থাকে। তবে কারও কারও জ্বর ভালো হয়ে আবার আসতে পারে এটকে "Physical fever" বলে। ৩দিন থেকে সর্বোচ্চ 14 দিনও থাকতে পারে। এছাড়া আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তাই নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। ডাক্তারে কাছে জরুরি ভিত্তেতে যাওয়া উচিৎ এবং পরীক্ষা করে ডেঙ্গু কিনা নিশ্চিত হতে হবে, তবে 3 থেকে 4 দিনের জ্বরে অনেক সময় ডেঙ্গু কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়না। এসব কিছু ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে জানতে পারবেন।


ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা কি ?

মূলত ডেঙ্গু জ্বরের কোনো চিকিৎসা নেই। নিয়মিত বিশ্রাম নেয়া তরল জাতীয় খাবার খাওয়া। "Paracetamol" বা "Napa" জাতীয় ঔষধ সেবন করা। যেমন ডাব খেতে পারেন, স্যালাইন খেতে পারেন, গ্লুকোজ ইত্যাতি শরবত ও পানীয় জাত খাবার। সাধারনত ডেঙ্গু জ্বর 7 থেকে 8 দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় এমনকি চিকিতসা না করালেও ভালো হবে। তবে ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতো হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগির শরীর মুছে দিতে হবে। প্রচণ্ড ব্যথার কারণে এসপিরিন বা ব্যথানাশক ঔষধ খাওয়া যাবেনা। সব মিলিয়ে যদি কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে জরুরি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। অবহেলার কারণে মৃত্যুও হতে পারে।


ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণী

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার জন্য প্রথমে নিজের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস ডেঙ্গু মশা থেকে ছড়ায় তাই মশার আস্তানা ধ্বংস করে দিতে হবে। সাধারণত ডেঙ্গু মশা শরের বিভিন্ন দালান ও আশে পাশে জমে থাকা পানি থেকে জন্ম নেয়। ছাদে জমে থাকা পানি, ডাবের খোসায় জমে থাকা পানি, ফুলের টবে ডেঙ্গু মশা ডিম পারে। ডেঙ্গু মশা গ্রামে বা বস্তিতে হয় না। তাই নিজের চারপাশ ভালো ভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। কোথাও 4 থেকে 5 দিনের বেশি সময় পানি জমা করে রাখা যাবেনা। এমন স্বচ্ছ পানিতে ডেঙ্গু ডিম পারে বংশ বিস্তার করে। তাই এগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। ডেঙ্গু মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধা বেলা কামড় দেয় তবে যে কোনো সময় কামড়াতে পারে। দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে, প্রয়োজনে মশা নিধন ব্যবস্থা করতে হবে, কয়েল এবং স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।


Copy Code And Press "1"

ডেঙ্গুর ইতিহাস

ডেঙ্গুর কথা অনেক আগে থেকেই জানা যায় তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় 1979 থেকে 1980 সালে এশিয়া, আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকা ডেঙ্গুর মহামারিতে পতিত হয় তখন থেকেই বিষয়টি আলোচনায় আসে। সে সময় থেকে 1940 সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক ছিল, আর 1940 এর দিকে এসে এটি শিশু মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডেঙ্গু শব্দটি এসেছে সোহাইলি ভাষা থেকে, ডিঙ্গা পেপো শব্দ থেকে ডেঙ্গু শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ হচ্ছে খারাপ আত্মা, জানা যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের গোলামদের যদি ডেঙ্গু জ্বর হত তখন তাদের হাটার ভঙ্গিমা ডান্ডি নৌকার মত দেখা যেত, তা থেকে ডান্ডি জ্বর বলা হত, ধীরে ধীরে ডেঙ্গু নাম ধারণ করেছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির হাড়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভুত হয়, এতটাই ব্যথা হয় যে মনে হবে হাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে তাই এই রোগকে ব্রেক বোন ফিভারও বলা হয়।


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আসসালাম অলাইকুম

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post