দাজ্জালের আগমণের পূর্ব মুহূর্তে মুসলমানদের অবস্থা খুব ভাল থাকবে। পৃথিবীতে শক্তিশালী এবং বিজয়ী থাকবে। সম্ভবত: এই শক্তির পতন ঘটানোর জন্যই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে।
দাজ্জাল কে ? কি তার পরিচয়।
দাজ্জাল মানব জাতি থেকেই আসবে সে মানব জাতিরই একজন। দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য ও মুসলমানদের তার সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য আমাদের নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" দাজ্জালের পরিচয় দিয়ে গেছেন দাজ্জাল অন্যান্য মানুষের তুলনায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের অধিকারী হবে। জাহেল-মূর্খ ও হতভাগ্য ব্যতীত কেউ দাজ্জালের ধোকায় পড়বেনা।
নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" দাজ্জালকে স্বপ্নে দেখে তার শারীরিক গঠনের বর্ণনাও প্রদান করেছেন। তিনি বলেনঃ দাজ্জাল হবে বৃহদাকার একজন যুবক পুরুষ, শরীরের রং হবে লাল, বেঁটে, মাথার চুল হবে কোঁকড়া, কপাল হবে উঁচু, বক্ষ হবে প্রশস্ত, চক্ষু হবে টেরা এবং আঙ্গুর ফলের মত উঁচু। দাজ্জাল নির্বংশ হবে। তার কোন সন্তান থাকবেনা। দাজ্জালের কি চোখ কানা থাকবে ? হ্যাঁ বিভিন্ন হাদিসে বলা আছে দাজ্জালের চোখ অন্ধ থাকবে। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে দাজ্জালের ডান চোখ অন্ধ থাকবে।
দাজ্জালকে চিনবো কিভাবে ?
দাজ্জালকে চেনার সবচেয়ে বড় আলামত হলো তার কপালে কাফের ( كافر ) লেখা থাকবে। অপর বর্ণনায় আছে তার কপালে ( ك ف ر ) এই তিনটি বর্ণ লেখা থাকবে। প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে। অপর বর্ণনায় আছে শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে।
দাজ্জালের ফিতনা সমূহ।
আদম সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির জন্য দাজ্জালের চেয়ে বড় ফিতনা আর নেই। সে এমন অলৌকিক বিষয় দেখাবে যা দেখে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়বে। দাজ্জাল নিজেকে প্রভু ও আল্লাহ হিসেবে দাবী করবে। তার দাবীর পক্ষে এমন কিছু প্রমাণও উপস্থাপন করবে যে সম্পর্কে নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" আগেই সতর্ক করেছেন। মুমিন বান্দাগণ এগুলো দেখে মিথ্যুক দাজ্জালকে সহজেই চিনতে পারবে এবং আল্লাহর প্রতি তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু দুর্বল ঈমানদার লোকেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে ঈমান হারা হবে। দাজ্জাল নিজেকে রাব্ব বা প্রভু হিসেবেও দাবী করবে। ঈমানদারের কাছে এ দাবীটি সুস্পষ্ট দিবালোকের মত মিথ্যা বলে প্রকাশিত হবে। দাজ্জাল তার দাবীর পক্ষে যত বড় অলৌকিক ঘটনাই পেশ করুক না কেন মুমিন ব্যক্তির কাছে এটি সুস্পষ্ট হবে যে সে একজন অক্ষম মানুষ, পানাহার করে, নিদ্রা যায়, পেশাব-পায়খান করে। সর্বোপরি সে হবে অন্ধ। যার ভিতরে মানবীয় সব দোষ-গুণ বিদ্যমান সে কিভাবে রব্ব ও আল্লাহ হতে পারে!!! একজন সত্যিকার মুমিনের মুমিনের বিশ্বাস হলো:
মহান আল্লাহ সর্বপ্রকার মানবীয় দোষ-ত্রুটি হতে সম্পূর্ণ মুক্ত। কোন সৃষ্টজীবই তার মত নয়। আল্লাহকে দুনিয়ার জগতে কোন মানুষের পক্ষে দেখাও সম্ভব নয়। ফাতেমা বিনতে কায়স (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি মসজিদে গমণ করে নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এর সাথে নামায আদায় করলাম। আমি ছিলাম মহিলাদের কাতারে। তিনি নামায শেষে হাসতে হাসতে মিম্বারে উঠে বসলেন। প্রথমেই তিনি বললেন: প্রত্যেকেই যেন আপন আপন জায়গায় বসে থাকে। অতঃপর তিনি বললেন: তোমরা কি জান আমি কেন তোমাদেরকে একত্রিত করেছি? তাঁরা বললেন: আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। অতঃপর তিনি বললেন: আমি তোমাদেরকে এ সংবাদ দেয়ার জন্যে একত্রিত করেছি যে তামীম দারী ছিল একজন খৃষ্টান লোক। সে আমার কাছে আগমণ করে ইসলাম গ্রহণ করেছে। অতঃপর সে মিথ্যুক দাজ্জাল সম্পর্কে এমন ঘটনা বলেছে যা আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করতাম। লাখ্ম ও জুযাম গোত্রের ত্রিশ জন লোকের সাথে সে সাগর পথে ভ্রমণে গিয়েছিল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার শিকার হয়ে এক মাস পর্যন্ত তারা সাগরেই ছিল।
অবশেষে তারা সাগরের মাঝখানে একটি দ্বীপে অবতরণ করলো। দ্বীপের ভিতরে প্রবেশ করে তারা মোটা মোটা এবং প্রচুর চুল বিশিষ্ট একটি অদ্ভুত প্রাণীর সন্ধান পেল। চুল দ্বারা সমস্ত শরীর আবৃত থাকার কারণে প্রাণীটির অগ্রপশ্চাৎ নির্ধারণ করতে সক্ষম হলোনা। তারা বলল: অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি ? সে বললো: আমি সংবাদ সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। তারা বললো: কিসের সংবাদ সংগ্রহকারী ? অতঃপর প্রাণীটি দ্বীপের মধ্যে একটি ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে বললো: হে লোক সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও। সে তোমাদের কাছ থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তামীম দারী বলেন: প্রাণীটি যখন একজন লোকের কথা বললো: তখন আমাদের ভয় হলো যে হতে পারে সে একটি শয়তান। তথাপিও আমরা ভীত হয়ে দ্রুত অগ্রসর হয়ে ঘরটির ভিতরে প্রবেশ করলাম। সেখানে প্রবেশ করে আমরা বৃহদাকার একটি মানুষ দেখতে পেলাম। এত বড় আকৃতির মানুষ আমরা ইতিপূর্বে আর কখনও দেখিনি। তার হাত দু’টিকে ঘাড়ের সাথে একত্রিত করে হাঁটু এবং গোড়ালীর মধ্যবর্তী স্থানে লোহার শিকল দ্বারা বেঁধে রাখা হয়েছে।
আমরা বললাম: মরণ হোক তোমার! কে তুমি ? সে বললো: তোমরা আমার কাছে আসতে সক্ষম হয়েছ। তাই আগে তোমাদের পরিচয় দাও। আমরা বললাম: আমরা একদল আরব মানুষ নৌকায় আরোহন করলাম। সাগরের প্রচন্ড ঢেউ আমাদেরকে নিয়ে একমাস পর্যন্ত খেলা করলো। অবশেষে তোমার দ্বীপে উঠতে বাধ্য হলাম। দ্বীপে প্রবেশ করেই প্রচুর পশম বিশিষ্ট এমন একটি জন্তুর সাক্ষাৎ পেলাম, প্রচুর পশমের কারণে যার অগ্রপশ্চাৎ চেনা যাচ্ছিলনা। আমরা বললাম: অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি ? সে বললো: আমি সংবাদ সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। আমরা বললাম: কিসের সংবাদ সংগ্রহকারী ? অতঃপর প্রাণীটি দ্বীপের মধ্যে এই ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে বললো: হে লোক সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও। সে তোমাদের নিকট থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাই আমরা তার ভয়ে তোমার কাছে দ্রুত আগমণ করলাম। হতে পার তুমি একজন শয়তান- এভয় থেকেও আমরা নিরাপদ নই। সে বললো: আমাকে তোমরা "বাইসান" সম্পর্কে সংবাদ দাও।
আমরা তাকে বললাম: বাইসানের কি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছো ? সে বললো: আমি তথাকার খেজুরের বাগান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছি। সেখানের গাছগুলো এখনও ফল দেয় ? আমরা বললাম: হ্যাঁ। সে বললো: সে দিন বেশী দূরে নয় যে দিন গাছগুলোতে কোন ফল ধরবেনা। অতঃপর সে বললোঃ আমাকে বুহাইরাতুত্ তাবারীয়া সম্পর্কে সংবাদ দাও। আমরা তাকে বললামঃ বুহাইরাতুত্ তাবারীয়ার কি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছো ? সে বললোঃ আমি জানতে চাই সেখানে কি এখনও পানি আছে ? আমরা বললাম: তথায় প্রচুর পানি আছে। সে বললোঃ অচিরেই তথাকার পানি শেষ হয়ে যাবে। সে পুনরায় বললোঃ আমাকে যুগার নামক ঝর্ণা সম্পর্কে সংবাদ দাও। আমরা তাকে বললাম: সেখানকার কি সম্পর্কে তুমি জানতে চাও ? সে বললো: আমি জানতে চাই সেখানে কি এখনও পানি আছে ? লোকেরা কি এখনও সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করছে ? আমরা বললাম: তথায় প্রচুর পানি রয়েছে। লোকেরা সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করছে।
সে বলল: তাই না কি ? আমরা বললাম তাই। সে বললোঃ তার আনুগত্য করাই তাদের জন্য ভাল। এখন আমার কথা শুন। আমি হলাম দাজ্জাল। অচিরেই আমাকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আমি বের হয়ে "40" চল্লিশ দিনের ভিতরে পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণ করবো। তবে মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করা আমার জন্য নিষিদ্ধ থাকবে। যখনই আমি মক্কা বা মদীনায় প্রবেশ করতে চাইবো তখনই ফেরেশতাগণ কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে আমাকে তাড়া করবে। মক্কা-মদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ পাহারা দিবে। হাদীছের বর্ণনাকারী ফাতেমা বিনতে কায়েস বলেন: নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" হাতের লাঠি দিয়ে মিম্বারে আঘাত করতে করতে বললেন: "এটাই মদীনা, এটাই মদীনা, এটাই মদীনা" এখানে দাজ্জাল আসতে পারবেনা। অতঃপর নবী "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" মানুষকে লক্ষ্য করে বললেন: তামীম দারীর হাদীছটি আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। তার বর্ণনা আমার বর্ণনার অনুরূপ হয়েছে। বিশেষ করে মক্কা ও মদীনা সম্পর্কে। শুনে রাখো! সে আছে সাম দেশের সাগরে "ভূমধ্য সাগরে বা আরব সাগরে তা নয় সে আছে পূর্ব দিকে সে আছে পূর্ব দিকে সে আছে পূর্ব দিকে"। এই বলে তিনি পূর্ব দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। ফাতেমা বিনতে কায়েস বলেন: আমি এই হাদীছটি নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এর নিকট থেকে মুখস্থ করে রেখেছি।
দাজ্জালের যে সব ক্ষমতা দেখে মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়বে।
দাজ্জাল কোথা থেকে বের হবে ?
দাজ্জাল বের হওয়ার স্থান সম্পর্কেও রাসূল "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বর্ণনা দিয়েছেন। সে পূর্ব দিকের পারস্য দেশ থেকে বের হবে। সে স্থানটির নাম হবে খোরাসান। সেখান থেকে বের হয়ে সমগ্র দুনিয়া ভ্রমণ করবে। তবে মক্কা এবং মদীনায় প্রবেশ করতে পারবেনা। ফেরেশতাগণ সেদিন মক্কা-মদীনার প্রবেশ পথসমূহে তরবারি নিয়ে পাহারা দিবে। নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বলেন: পূর্বের কোন একটি দেশ থেকে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে যার বর্তমান নাম খোরাসানমুমিন।
দাজ্জালের সাথে থাকবে জান্নাত-জাহান্নাম।
দাজ্জালের সাথে জান্নাত এবং জাহান্নাম থাকবে। প্রকৃত অবস্থা হবে সম্পূর্ণ বিপরীত। দাজ্জালের জাহান্নামের আগুন প্রকৃতপক্ষে সুমিষ্ট পানি এবং জান্নাত হবে জাহান্নামের আগুন। নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বলেন: দাজ্জালের সাথে যা থাকবে তা আমি অবগত আছি। তার সাথে দুই টি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিস্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যাবে। যার সাথে দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে যেন দাজ্জালের আগুনে ঝাপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে। কারণ উহা সুমিষ্ট পানি। তার চোখের উপরে মোটা আবরণ থাকবে। কপালে কাফের লেখা থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সকল ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম হবে।
দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবেনা।
সহীহ হাদীছের বিবরণ অনুযায়ী দাজ্জালের জন্যে মক্কা ও মদীনাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। মক্কা ও মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর সকল স্থানেই সে প্রবেশ করবে। ফাতেমা বিনতে কায়েস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত দাজ্জালের হাদীছে এসেছে অতঃপর দাজ্জাল বললো: আমি হলাম দাজ্জাল। অচিরেই আমাকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আমি বের হয়ে চল্লিশ দিনের ভিতরে পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণ করবো। তবে মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করা আমার জন্য নিষিদ্ধ থাকবে। যখনই আমি মক্কা বা মদীনায় প্রবেশ করতে চাইবো তখনই কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে ফেরেশতাগণ আমাকে তাড়া করবে। মক্কা-মদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ পাহারা দিবে। সে সময় মদীনা শরীফ তিনবার কেঁপে উঠবে এবং প্রত্যেক মুনাফেক এবং কাফেরকে বের করে দিবে। যারা দাজ্জালের নিকট যাবে এবং তার ফিতনায় পড়বে তাদের অধিকাংশই হবে মহিলা। দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচানোর জন্য পুরুষেরা তাদের স্ত্রী, মা, বোন, কন্যা, ফুফু এবং অন্যান্য স্বজন মহিলাদেরকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখবে।
একস্থান হতে অন্য স্থানে দ্রুত পরিভ্রমণ করা।
নাওয়াস বিন সামআন থেকে বর্ণিত, নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" কে দাজ্জালের চলার গতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয় দাজ্জালের চলার গতিও সে রকম হবে। তিনি আরো সংবাদ দিয়েছেন যে মক্কা ও মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চল সে পরিভ্রমণ করবে। মক্কা ও মদীনার সমস্ত প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ তলোওয়ার হাতে নিয়ে পাহারা দিবে।
কারা দাজ্জালের অনুসরণ করবে ?
দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদী, তুর্কী এবং অনারব লোক। তাদের অধিকাংশই হবে গ্রাম্য মূর্খ এবং মহিলা। ইহুদীরা মিথ্যুক কানা দাজ্জালের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী দাজ্জাল হবে তাদের বাদশা। তার নেতৃত্বে তারা বিশ্ব পরিচালনা করবে। নবী হয়রত মাহাম্মদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" বলেন: দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদী এবং মহিলা। তিনি আরো বলেন: ইস্পাহানের "70" সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাই বিহীন চাদর।
দাজ্জাল পৃথিবীতে কত দিন থাকবে ?
সাহাবীগণ রাসূল "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" কে জিজ্ঞেস করেছেন দাজ্জাল পৃথিবীতে কত দিন অবস্থান করবে ? উত্তরে তিনি বলেছেন: সে চল্লিশ "40" দিন অবস্থান করবে। প্রথম দিনটি হবে এক বছরের মত লম্বা। দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের মত। তৃতীয় দিনটি হবে এক সপ্তাহের মত। আর বাকী দিনগুলো দুনিয়ার স্বাভাবিক দিনের মতই হবে। আমরা বললাম: যে দিনটি এক বছরের মত দীর্ঘ হবে সে দিন কি এক দিনের নামাযই যথেষ্ট হবে ? উত্তরে তিনি বললেন: না বরং তোমরা অনুমান করে সময় নির্ধারণ করে নামায পড়বে।