বর্তমানে চারপাশে যেদিকেই তাকাবেন প্রায় সবার হাতেই "Android" অপারেটিং সিস্টেমের মোবাইল দেখতে পারবেন। "Android" মোবাইলের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে এটি সময়ের সাথে সাথে কিছুটা ল্যাগিন বা স্লো হয়ে যায়। মোবাইলটিকে অনেক ভাবেই "Smooth" করে তোলা সম্ভব। মোবাইল হ্যাং সমস্যার সমাধান যেমন:
মোবাইল ফোনটির "Firmware" আপডেট করতে হবে।
আপডেটেড ফার্মওয়্যার অনেক ক্ষেত্রেই কিছু ল্যাগের সমস্যা দূর করে থাকে। "Update" এর অর্থই হচ্ছে আগের তুলনায় নতুন কিছু সুবিধা যোগ করা। আর, "Firmware" আপডেটের মাধ্যমে মোবাইল ছাড়াও প্রতিটি ডিভাইসেরই কম-বেশি ক্যাপাবিলিটি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। অনেক সময় হয়ত সেই পরিবর্তন চোখে ধরা পরে না তবে এমন অনেক ত্রুটি মুক্ত করার জন্য মোবাইলের "Firmware" আপডেট করা জরুরী।
মাঝে মাঝেই মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ চেক করুন।
স্মার্ট ফোনের মেমরীর পরিমান কমে গেলে স্মার্ট ফোনে ল্যাগ বা স্লো অনুভব করতে পারেন। এজন্য মাঝে মাঝে ইন্টারনাল ফাইলে জমে থাকা গেমস, অ্যাপ, মিডিয়া ফাইল যেমন, গান, ভিডিও ইত্যাদি মেমরী কার্ডে "Transfer" করে দিন। তবে, বেশির ভাগ লো-এন্ড স্মার্টফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজের পরিমাণ কম হয়ে থাকে বিধায় এই টিপসটি সেই সব স্মার্ট ফোনে কাজ নাও করতে পারে।
মোবাইল স্লো হয় কেন ? মোবাইল ফাস্ট করার উপায়।
বিভিন্ন সময়ে প্লে স্টোরে ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় অনেক রকম অ্যাপ ইন্সটল করি কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই অ্যাপ গুলো খুব একটা ব্যবহার করি না। এরকম অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ "Delete" করা উচিৎ। এতে করে মোবাইলের "RAM" ফ্রি থাকবে এবং ফলাফল স্বরূপ মোবাইল ফোনটি আগের তুলনায় ল্যাগ ফ্রি হবে। কম্পিউটার কোন সমস্যায় পরলে কম্পিউটার রিস্টার্ট দিয়ে থাকি, তাতে করে কম্পিউটারে সমস্যা কিছু ক্ষেত্রে দূর হয়ে যায়। মোবাইল ফোনের ব্যপারটি একই। যদিও, এই ট্রিকসটি একটি টেম্পোরারী অপশন, তবুও এটা কাজ করে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি "Reset" করুন।
আমরা সবাই জানি যে "Reset" করার অর্থ হচ্ছে "পুনঃস্থাপন করা" বা "নতুন করে করা" আর মোবাইলের ক্ষেত্রেও "রিসেট" অপশনটি ঠিক এর অর্থের মতই কাজ করে। নিশ্চয়ই মনে আছে যখন মোবাইলটি কিনে এনেছিলেন তখন স্মার্টফোনটির অপারেটিং ভীষন "Smooth" ছিল ? কিন্তু, সময়ের সাথে "Android" মোবাইলটির মধ্যে নানা রকম ফাইল জমা পরার কারনে সেই মোবাইলটি হয়ে গিয়েছে ল্যাগিন করা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি স্মার্ট ফোনটি "Factory Reset" করেন তবে স্মার্ট ফোনটি থেকে সব ফাইল মুছে গিয়ে ঠিক সেই প্রথম কিনে আনার দিনের মত স্মুথ হয়ে যাবে। সব ফাইল বলতে ব্যবহারের জন্য যে ফাইল গুলো জমা হয়েছিল সেগুলোই বুঝাচ্ছি কিন্তু এতে করে যেহেতু সিস্টেম ফাইল মুছে যাচ্ছেনা তাই "Reset" করার পর পাবেন একদম Smooth" একটি স্মার্টফোন।
- সতর্কতাঃ "Factory Reset" ফলে স্মার্ট ফোনের ইন্টারন্নাল স্টোরেজে থাকা প্রয়োজনীয় কন্টাক্ট, ক্ষুদে বার্দা, ক্যালেন্ডার এনট্রি, মেমো এবং যে অ্যাপ গুলো ব্যবহার করতেন এগুলো সব মুছে যাবে। তাই, "Reset" করার পূর্বে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সব তথ্য গুলো ব্যাক-আপ নিয়ে রাখুন। যদিও, গুগলের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের ফলে কন্টাক্ট এবং ক্যালেন্ডার এন্ট্রি সহ কিছু ক্ষেত্রে ক্ষুদে বার্তাও সিনক্রোনাইজড হয়ে থাকে।
মোবাইল পরিষ্কার করার অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন।
"Google Play" স্টোর থেকে "Task Killer" মত কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপ ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারেন। পুরোনো স্মার্ট ফোন গুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন "Auto task killer" অ্যাপটি। এটি নির্ধারিত সময় অন্তর অন্তর নির্ধারিত কিছু অ্যাপ প্রোসেস কিল করে স্মার্ট ফোনের "RAM" ফ্রি করতে সাহায্য করবে এবং স্বাভাবিক ভাবেই, বেশি "RAM" ফ্রি থাকার অর্থ হচ্ছে ফোন দ্রুত অপারেট হবে।
ভালো মানের একটি "Antivirus" অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। কম্পিউটারের মত মোবাইল ও নানা রকম "Virus" এবং "Malware" দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং একটি ভালো "Antivirus" এই সকল ভাইরাস এবং "Malware" কে সনাক্ত করন এবং পরে মুছে ফেলে ফোনটিকে কিছুটা হলেও গতিশীল করবে। ব্যবহার করতে পারেন "Start Up Manager" এর মত কিছু অ্যাপ। এই অ্যাপের ফলে ফোন বুট বা রিস্টার্ট হবার সময় নির্ধারন করে দিতে পারবেন যে ঠিক কোন অ্যাপ গুলো সক্রিয় হবে আর কোন গুল বন্ধ থাকবে। "Juice Defender" টাইপের অ্যাপ গুলো অনান্য অ্যাপ গুলোকে ব্যাকগ্রাউন্ডে অটোমেটিক স্টার্ট হতে না দিয়ে ফোনের ব্যাটারীকে সাপোর্ট দিয়ে যাবে।
"Cache Cleaner" অ্যাপ গুলো মোবাইলের মেমরীতে জমে থাকা বিভিন্ন রকম কেচ ফাইল মুছে দিয়ে স্মার্টফোনকে "Smooth" করবে। "Apps to SD card" অ্যাপটি একটি প্রয়োজনীয় অ্যাপ। এর সাহায্যে মোবাইল ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজে ইন্সটলড থাকা অ্যাপ ফোনের এক্সটার্নাল মেমরী কার্ডে ট্রান্সফার করতে পারবেন এবং এতে করে ইন্টার্নাল স্টোরেজ ফ্রী হবে। বিধায় কিছুটা হলেও স্মার্ট ফোন দ্রুত কাজ করবে। তবে মনে রাখবেন, এই অ্যাপ এর সাহায্যে সকল প্রকার অ্যাপ মেমরী কার্ডে ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে না কিছু কিছু অ্যাপ ট্র্যান্সফার করার জন্য ফোনটিকে "Root" করে নিতে হবে। "Spare parts" জাতীয় অ্যাপ কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের কনফিগারেশন প্যানেলে এক্সেস করতে দিবে, যেমন ধরুন "Transition animation" কনট্রোল।
মোবাইলটি "Root" করতে পারেন।
স্মার্ট ফোন "Root" করার ফলে কিছু অ্যাডিশনাল সুবিধা পাবেন এবং সেই সুবিধা গুলোকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল ফোনটি আরও ভালো ভাবে কাজ করতে পারবেন। যদিও এক্ষেত্রে "Root" এর প্রোসেসটি এক প্রকারের রিস্কি সমাধানের পর্যায় পরে তবে এখন ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইট এবং ফোরামের কল্যাণে মোবাইল ফোন "Root" করা এখন বলা চলে অনেক সহজ এবং ঝুঁকির পরিমানও ঠিক আগের মত নেই। ঝুঁকির কথা বললাম কেননা, যদি রুট করার সময় সফল না হন তবে স্মার্ট ফোনটি ব্রিক অবস্থায় চলে যেতে পারে। আবার, সফল ভাবে "Root" এর প্রোসেস সম্পন্ন করলেও স্মার্ট ফোনের সাথে দেয়া "Warranty" অফারটা শেষ হয়ে যাবে যদিও এখন চাইলেই রুটেড "Android" ডিভাইসটি আন-রুট করতে পারবেন এবং ওয়ারেন্টি ফিরে পাবেন। এখন বলি যে, একটি "Android" অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্ট ফোন স্পিড আপ এর সাথে এই রুটিং এর কী সম্পর্ক।
"Android" ডিভাইসটি "Root" করার পর ডিভাইসের প্রসেসরটি ওভারক্লক করতে পারবেন এবং একটি ওভার ক্লকড প্রসেসর স্বাভাবিক ভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা প্রসেসরের তুলনায় বেশি পরিমান কাজ করতে সক্ষম হবে। তাই, প্রসেসর ওভার ক্লক করার মাধ্যমে এভাবেই "Android" ফোনটির গতি বৃদ্ধি করতে পারবেন। "Android" ডিভাইসটি "Root" করার পর ডিভাইসটিতে কাস্টম রম ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। যদিও, কাস্টম রম ব্যবহার কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের পর্যায়ে পরে এবং ঝুঁকি পূর্ন তবুও কাস্টম রম ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের গতি বৃদ্ধি করা যায় খুব সহজেই। কেননা, কাস্টম রমে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ থাকে না বললেই চলে এবং এর ফলে কোন অ্যাপ অহেতুক মোবাইল ফোনের র্যামের রিসোর্স ব্যবহার করে না এবং এছাড়াও কাস্টম রম ব্যবহারের ফলে মোবাইল ফোনের কিছু বাগ ফিক্স হয়ে যায়। তবে ঝুঁকির কথা বললাম এজন্যেই যে মাঝে মাঝে কাস্টম রম গুলো স্ট্যাবল হয় না এবং এর ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
মোবাইল অপ্রোয়োজনীয় যেকোনো অ্যাপ "Delete" করতে পারবেন।
প্রতিটি "Android" মোবাইল ফোনের স্টক রমে দেখা যায় নানা রকম অ্যাপ "Pre-installed" করা থাকে যা অনেকেই ব্যবহার করেন না। "Root" করার ফলে যেহেতু ডিভাইসের "অ্যাডমিনিস্ট্রেশন" ক্ষমতা হাতে পাচ্ছেন সে কারনে চাইলে সিস্টেমে ইন্সটল্ড থাকা অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে পারবেন ফলে মোবাইল ফোনটি কিছুটা হলেও হবে "Smooth" এবং দ্রুত গতির।